দেশের দুই সীমান্ত এলাকায় ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) গুলিতে দুই বাংলাদেশি নিহত হয়েছেন। গতকাল শুক্রবার রাতে সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার উপজেলা এবং আজ শনিবার ভোরে ঠাকুরগাঁওয়ের হরিপুর উপজেলার সীমান্ত এলাকায় এসব ঘটনা ঘটে।দোয়ারাবাজার উপজেলার ভাঙারপাড় এলাকায় বিএসএফের গুলিতে নিহত ব্যক্তির নাম শফিকুল ইসলাম (৪৫। তিনি একই এলাকার বাসিন্দা। অন্যদিকে হরিপুর উপজেলার মিনাপুর সীমান্তে নিহত ব্যক্তির নাম মো. রাসেল (২০)। তিনি একই উপজেলার রাজবাড়ী এলাকার নিয়াজ উদ্দিনের ছেলে।সুনামগঞ্জ বিজিবি-২৮ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল এ কে এম জাকারিয়া কাদির জানান, গতকাল ভাঙারপাড় দিয়ে ১০-১২ জন বাংলাদেশি অবৈধভাবে গরু আনতে ভারতের ৫০০ গজ ভেতরে যান। সেখান থেকে তাঁরা গরু নিয়ে আসার পথে বিএসএফের বাধার মুখে পড়েন। এ সময় তাঁরা বিএসএফকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করেন। অন্যদিকে বিএসএফ চার-পাঁচটি সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে। পরে তাঁরা পিছু না হটায় তিন-চারটি গুলি ছোড়ে বিএসএফ। গুলি লেগে শফিকুল সেখানে গুরুতর আহত হন। পরে দোয়ারাবাজার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গতকাল রাত আড়াইটার দিকে শফিকুলের মৃত্যু হয়।এদিকে ঠাকুরগাঁওয়ের হরিপুর উপজেলার সীমান্ত এলাকার কয়েকজন বাসিন্দা ও জনপ্রতিনিধি সূত্রে জানা গেছে, আজ ভোর চারটার দিকে রাসেলসহ কয়েকজন মিনাপুর সীমান্ত এলাকার শূন্যরেখা পেরিয়ে ভারতীয় সীমানার কাঁটাতারের বেড়ার কাছে যান। এ সময় বিএসএফের সদস্যরা তাঁদের লক্ষ্য করে গুলি ছোড়েন। এতে রাসেল গুলিবিদ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলে মারা যান। ঘটনার পর বিএসএফের সদস্যরা তাঁর লাশ ভারতে নিয়ে যান।রাসেলের বাবা নিয়াজ উদ্দিন বলেন, রাসেল টুকটাক কাজ করত। দুই দিন ধরে ওর খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না। কেউ হয়তো টাকার লোভ দেখিয়ে ওকে সীমান্তে নিয়ে গেছে।দিনাজপুর বিজিবি-৪২ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আবদুল্লাহ আল মঈন হাসান বলেন, ‘এ বিষয়ে বিএসএফ নিশ্চিত না করা পর্যন্ত আমরা বিস্তারিত বলতে পারছি না। এ ঘটনায় বিজিবি ও বিএসএফের কোম্পানি কমান্ডার পর্যায়ে পতাকা বৈঠক ডাকা হয়েছে। পতাকা বৈঠক হলেই বিস্তারিত জানাতে পারব।’বিএসএফের গুলিতে বাংলাদেশি নিহত হওয়ার খবর পেয়েছেন জানিয়ে হরিপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাকারিয়া মণ্ডল বলেন, এ বিষয়ে তাৎক্ষণিকভাবে বিস্তারিত জানতে পারেননি।
