ঈদ ছুটিতে কর্মস্থল থেকে ঘরে ফিরতে শুরু করেছে দ্বীপজেলা ভোলার মানুষ। স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে কয়েক গুণ বেশি যাত্রী নিয়ে ভোলার বিভিন্ন লঞ্চ ঘাটে ভিড়তে দেখা গেছে নৌযানগুলোকে। এদিকে সরকার অনুমোদিত লঞ্চ ও সি-ট্রাকের পাশাাপাশি বৈরী আবহাওয়া উপেক্ষা করে নিষিদ্ধ ছোট ছোট ট্রলারে উত্তাল মেঘনায় যাত্রী পারাপার করতে দেখা গেছে। যাত্রা পথে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের অভিযোগ করেছে সাধারণ যাত্রীরা।বৃহস্পতিবার সকালে সরেজমিন ভোলা সদর উপজেলার ইলিশা লঞ্চঘাটে দেখা গেছে, ভোর রাত থেকেই লক্ষ্মীপুরের মজু চৌধুরীর ঘাট থেকে যাত্রী বোঝাই করে একের পর এক ইলিশা লঞ্চঘাটে আসছে বিআইডব্লিউটিসির সি-ট্রাক। প্রতিটি সি-ট্রাকেরই ছিল ধারণ ক্ষমতার দুই থেকে তিনগুণ বেশি যাত্রী। চট্টগ্রাম, সিলেটসহ পূর্বাঞ্চলের যাত্রীরা এ রুটে যাতায়াত করে। অপরদিকে গতকাল বুধবার ঢাকার সদর ঘাট থেকে ছেড়ে আসা ১০টি লঞ্চ সকালে ইলিশাসহ জেলার বিভিন্ন ঘাটে যাত্রী নামিয়ে ঢাকায় ছুটে যায়।এছাড়া ভোলা–বরিশাল রুটের লঞ্চগুলোতেও ছিল যাত্রীদের উপচে পড়া ভিড়।বিআইডব্লিউটিএ সূত্রে জানা গেছে, ১৫ মার্চ থেকে ১৫ অক্টোবর পর্যন্ত ৮ মাস ভোলার ইলিশা থেকে সাগর মোহনা পর্যন্ত মেঘনার ১১০ কিলোমিটার এলাকা বিপদজনক জোন হিসাবে চিহ্নিত করে সি-সার্ভে ছাড়া অন্য সকল নৌযানে যাত্রী পরিবহনে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। কিন্তু নিষেধাজ্ঞার তোয়াক্কা না করে ভোলা-লক্ষ্মীপুর রুটে নিষিদ্ধ ট্রলারে যাত্রী পারাপার অব্যাহত রয়েছে।
এ রুটের মতো দৌলতখান-আলেকজান্ডার, তজুমদ্দিন-মনপুরা, বেতুয়া- মনপুরা, রামনেওয়াজ-চেয়ারম্যান ঘাট জেলার অভ্যান্তরীণ, পার্শ্ববর্তী লক্ষ্মীপুর ও নোয়াখালীর ১৫টি রুটে নিষিদ্ধ ট্রলার ও স্পিডবোট চলাচল করছে।বিআইডব্লিউটিএ ও আইন শৃঙ্খলাবাহিনীর যথাযথ তদারকির অভাবে ট্রলার মালিকরা বেপরোয়া হয়ে উঠেছে বলে জানান চট্টগ্রাম থেকে আসা যাত্রী জামাল উদ্দিন।তিনি জানান, জীবন ঝুঁকি নিয়ে আসা এসব যাত্রীদের কাছ থেকে আদায় করা হচ্ছে অতিরিক্ত ভাড়া।
চট্টগ্রাম থেকে আসা মিজানুর রহমান, মো. ইউসুফ, খোরশেদ আলমসহ ৭-৮ জন পোশাক শ্রমিক জানান, নৌযান সংকট ও বিকল্প উপায় না থাকায় অবৈধ ট্রলারে উত্তাল মেঘনা পাড়ি দিতে হচ্ছে তাদের। সি-ট্রাকের অপেক্ষায় থাকলে ভোলায় আসতে বিকাল হয়ে যেত। তাই তারাতাররি স্বজনদের কাছে পৌঁছানোর জন্য ঝুঁকি নিয়েই তারা ট্রলারে এসেছেন।বিআইডব্লিউটিএর ভোলা নদী বন্দরের সহকারী পরিচালক মো. রিয়াদ হোসেন কালের কণ্ঠকে জানান, ভোলা-লক্ষ্মীপুর চারটি সি-ট্রাক ও দুইটি লঞ্চ নিয়মিত চলাচল করছে। ঈদে এ রুটে যাত্রীদের ভোগান্তির কথা চিন্তা করে আরো একটি সি-ট্রাকের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। কিন্তু নানা কারণে সঠিক সময়ে সি-ট্রাকটি আনা সম্ভব হয়নি। এছাড়াও ভোলা-লক্ষ্মীপুর নৌরুটটি যেহেতু বিপদজনক জোনের আওতায় রয়েছে তাই অবৈধ নৌযানে যাত্রী পারাপার বন্ধে তাদের নিয়মিত অভিযান অব্যাহত রয়েছে।