নিত্য নিউজ প্রতিবেদক:
গ্রাম উন্নয়ন কর্ম (গাক) এর বগুড়া কর্পোরেট অফিসের কর্মকর্তা কর্মচারীদের বিরুদ্ধে সরকারি অফিসের প্রাচীর নির্মাণে বাধা দেয়ার অভিযোগ উঠেছে, এসময় নির্মাণ শ্রমিককে চর থাপ্পড় মারার অভিযোগ করেছেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর বগুড়ার উপ-পরিচালক মতলুবুর রহমান।
হেনস্থার বিষয়ে জানতে চাইলে সেই নির্মাণ শ্রমিক হৃদয় এই প্রতিবেদককে বলেন, আমি দেয়াল নির্মাণে শ্রমিকের কাজ করছিলাম, এসময় অপরিচিত ১০-১৫ জন মানুষ এসে আমাকে ও অন্যান্য মিস্ত্রীদের কাজ বন্ধ করে চলে যেতে বলে, চলে যেতে একটু দেরি হলে তাদের মধ্যে একজন আমার গালে চর থাপ্পড় মারলে আমরা সেখান থেকে দ্রুত সরে যাই।
এবিষয়ে উপ পরিচালকের কার্যালয়, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, বগুড়া, এর উপ-পরিচালক কৃষিবিদ মতলুবুর রহমান বলেন, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর খামার বাড়ি, বগুড়া, কার্যালয়ে পশ্চিম দিকের সীমানা প্রাচীর সড়ক সম্প্রসারণের সময় ভেঙ্গে ফেলা হয়। সড়ক সম্প্রসারণ কাজ শেষে, সাসেক কর্তৃক ভেঙ্গে ফেলা প্রাচির পুনর্নির্মাণ করার সময়, গত ২ ডিসেম্বর, সোমবার, গ্রাম উন্নয়ন কর্ম (গাঁক) এর বগুড়া কর্পোরেট অফিসের কতিপয় কর্মকর্তা কর্মচারী, সহ ১৫-২০ জন বিভিন্ন বয়সের মানুষ এসে নির্মাণ শ্রমিক দের কাজে বাধা দেয়, এবং অকথ্য ভাষায় গালাগালি করে, নির্মাণাধীন পিলারের রড বাঁকিয়ে দেয়, এবং কর্মরত শ্রমিক হৃদয় (২০) কে চর থাপ্পড় মেরে তাড়িয়ে দেয় এবং নির্মাণ কাজ বন্ধ করে দেয়।
কাজে গাঁক এর কর্মকর্তা কর্মচারীরা কেন বাধা দিচ্ছে এই প্রশ্নের উত্তর এই কৃষিবিদ বলেন, যথাযথ সরকারি কর্তৃপক্ষর অনুমতি ছাড়া গাক এনজিওর কিছু কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা সরকারি সম্পত্তির উপর দিয়ে রাস্তা নির্মাণের দাবি করছে, এইখানে আমার কোনো সম্পত্তি নেই, এটা সরকারি সম্পত্তি, আমি তাদের বলেছি আপনারা উর্ধ্বতন কর্মকর্তার নিকট রাস্তা নির্মাণের অনুমতি নিয়ে আসেন, কর্তৃপক্ষ আমাকে যথাযথ নির্দেশনা দিলে আমি সেই কাজ বন্ধ রাখবো, কিন্তু প্রতিষ্ঠানের নিরাপত্তার স্বার্থে এই প্রচির নির্মাণ করা প্রয়োজন তাই আমি এই কাজ করছি।
উক্ত বিষয়ে গ্রাম উন্নয়ন কর্ম (গাক) এর নির্বাহী পরিচালক ডঃ খন্দকার আলমগীর হোসেন এই প্রতিবেদককে বলেন, আমার কোন কর্মকর্তা কর্মচারী কাউকে মেরেছে এটা আমি জানিনা, রাস্তার জমি নিয়ে বিরোধের বিষয়টি যানতে চাইলে তিনি বলেন, উপ-পরিচালকের কার্যালয়, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর খামারবাড়ি, বগুড়া, এর পিছনে আমাদের ও অন্যান্য বেশকিছু লোকজনের জমি রয়েছে, সেই জমিতে চলাচলের কোন রাস্তা নেই, তাই স্থানীয় জমির মালিক বৃন্দ ও গাকের কর্মকর্তারা উল্লেখ্য কৃষি অফিসারের নিকট চলাচলের রাস্তা ছেড়ে প্রাচীর নির্মাণ করতে অনুরোধ করেছেন।
কিন্তু সেই কৃষি কর্মকর্তা আমাদের অনুরোধ না রাখায় আমরা, বগুড়া পৌরসভা কতৃপক্ষের নিকট ও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর খামার বাড়ি, ফার্মগেট, ঢাকা, এর কর্তৃপক্ষের নিকট আবেদন করেছি। ডিএই কর্তৃক আবেদন গৃহীত হয়েছে, এবং ৩ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে, গত ২/১২/২০২৪ ইং তারিখে সাক্ষরিত উক্ত পত্রে ১০ কার্য দিবসের মধ্যে সরেজমিনে পরিদর্শন করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে।
অপর দিকে বগুড়া পৌরসভা কার্যালয়ে আবেদনের প্রেক্ষিতে ৪/১২/২০২৪ ইং তারিখে সাক্ষরিত একটি নোটিশে চলমান নির্মাণ কাজ বন্ধ রেখে আগামী ১১/১২/২০২৪ ইং তারিখে শুনানির দিন ধার্য করা হয়েছে, তার পরেও তারা নির্মাণ কাজ চলমান রেখেছেন।
স্থানীয় জমির মালিক বৃন্দ ও গাকের জমি আছে বিধায়, গাকের কর্মকর্তারা কর্মচারীরা সেই স্থানে উপস্থিত হয়ে তাদের নোটিশের বিষয়ে জানিয়ে কাজ বন্ধ রাখতে বলেছেন, এর বেশি কিছুই হয়নাই বলে জানান এই কর্মকর্তা।
নির্মাণ কাজ বন্ধে, পৌর কর্তৃপক্ষ নোটিশ প্রদান করার পরেও কাজ কেন চলমান রয়েছে এই বিষয়ে জানতে চাইলে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর খামার বাড়ি বগুড়া এর উপ পরিচালক কৃষিবিদ মতলুবুর রহমান, বলেন এখন পর্যন্ত আমি কোন নোটিশ পাইনি।
নির্মাণ শ্রমিককে মারধর করা হয়েছে কিনা এমন অভিযোগ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে শাজাহানপুর থানার অফিসার ইনচার্জ ওসি বলেন, নির্মাণ শ্রমিকে মারধরের কোন অভিযোগ পাইনি, তবে গাক এনজিও এর সাথে, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, খামারবাড়ি, বগুড়া, এর একটি বিরোধ চলছে, পুলিশের উপস্থিতিতে নির্মাণ কাজ চলমান রয়েছে, এবং বিষয়টি অফিসিয়ালি মিমাংসার প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।